এটুকু সম্মান ও স্বীকৃতি আমার প্রাপ্য ছিলো।
এভাবেই অভিমানের সুরে নিজের আক্ষেপগুলো জানাচ্ছিলেন করোনা আক্রান্ত গিটারিস্ট রিচার্ড কিশোর। জীবনের প্রায় পঞ্চাশ বছর কাটিয়েছেন যেই সঙ্গীতাঙ্গনে আজ দুঃসময়ে তাঁদের সহযোগিতা কোন চাইবার জিনিস নয় বরং প্রাপ্য অধিকারই ছিল তাঁর। অথচ অসুস্থতার সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকার এই সময়ে কাছের বন্ধু ও হাতে গোনা কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী ছাড়া কেউই তাঁর খোঁজ নেয়নি। ১৪ জুন থেকে করোনা নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে অবশেষে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিটে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠান, সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়, শিল্পকলা একাডেমি কিংবা বেসরকারী টেলিভিশনের যেকোনো সঙ্গীতানুষ্ঠানে রিচার্ড কিশোরের ছিল সরব উপস্থিতি। অর্থের দিকে না তাকিয়ে বিভিন্ন সময়ে শুধু একবার ডাকেই অনুষ্ঠান আয়োজনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কাজ করেছেন দায়িত্ব আর আগ্রহের সাথে। অথচ আজ সংকটের এ সময়ে আর্থিক প্রতিবন্ধকতায় চিকিৎসা খরচ নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে। বছর বিশেক আগে ওপেন হার্ট সার্জারি করানোর সময় পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে চিকিৎসা করান তিনি। সঙ্গীতাঙ্গনের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে প্রাপ্য অধিকার তখনো পাননি, পাচ্ছেন না আজও।
অন্যদিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যেখানে সংস্কৃতির সাথে যুক্ত সকলের তত্ত্বাবধান করার কথা ছিল সেখানে নিজেদের মন্ত্রণালয়ের সাথে যুক্ত ব্যক্তিরাই নন নিবন্ধিত। ফলস্বরূপ এর সাথে যুক্ত সকলকে যেকোনো সমস্যায় নির্ভরতার জন্যে মুখাপেক্ষী হতে হয় নিজ পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সংকটের সময়গুলোতে যাদের থেকে সম্মান ও স্বীকৃতি প্রাপ্তি ছিল খুবই স্বাভাবিক তাঁদের নির্বিকারত্ব আর উদাসীনতায় মনের তীব্র আঘাতকে এভাবেই প্রকাশ করেন রিচার্ড কিশোর। বন্ধু ও পরিচিতদের উদ্যোগে কিছু সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে সহযোগিতা পেলেও এই দুঃসময়ে তা যথেষ্ট নয়। অন্যদিকে একজন শিল্পী হিসেবে অন্যের কাছে সহযোগিতা চাইবার বিষয়টি হীনম্মন্যতায় ভুগছেন তিনি।
কিন্তু এ দেশের সাংস্কৃতিক মণ্ডলের এহেন দশায় একজন সঙ্গীত ব্যক্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে আসতে হবে আমাদেরই। আর তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সঙ্গীতাঙ্গনের সাথে যুক্ত ব্যক্তিত্ব এবং হৃদয়বান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার জন্যে অনুরোধ করা হচ্ছে।
যোগাযোগ: 01711059112, 01766887473
বিকাশ: 01711059112