রমজানের দ্বিতীয় দিন থেকে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে রাজধানীর নিম্নআয়ের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে সংগীতশিল্পীদের একটি দল। মিউজিশিয়ানস ফর হিউম্যানিটি নামের এ দলটি এর আগেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে দেশের মানুষের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। লকডাউনের এমন সংকটকালীন সময়ে অনেক নিম্নআয়ের মানুষের ঘরে দু’বেলা খাওয়ার মতো চালটুকুও নেই। আয়ের উৎস বন্ধ হওয়ায় হাত পাতার মতো অবস্থা হয়েছে অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের কিন্তু চক্ষু লজ্জায় চাইতে পারছেন না। এমন সব মানুষের পাশে দাঁড়াতে মাঠে নেমেছে ‘মিউজিশিয়ানস ফর হিউম্যানিটি’। প্রতিদিন ১০০টি করে মোট ১,০০০টি পরিবারকে সাহায্য পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে অর্থ সংগ্রহ করছে সংগীতশিল্পীদের এ দলটি। এর আগে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ২.৫ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে রাজধানীতে ৬৫০টি পরিবারের কাছে করে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট পৌঁছে দিয়েছে দলটি। প্রতি প্যাকেটে ৫ কেজি চাল, ৩ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি পেঁয়াজ, হাফ কেজি তেল, হাফ কেজি লবন ও একটি সাবান দেয়া হয় যা দিয়ে একটা পরিবার ৫-৭ দিন চলতে পারে।

এবারও আগের মতো ৫০০ টাকা সমমূল্যের, একই পরিমাণ খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট বিতরণ করা হবে। প্রায় ৪০ জনের এ দলটি, স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় খুঁজে খুঁজে, ব্যক্তিগত গাড়িতে করে অসহায় পরিবারগুলোর হাতে পৌঁছে দেবে খাবারসামগ্রী। ঢাকার বাইরে এলাকাগুলোতে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে ত্রাণ দেয়া হলেও বর্তমানে ঢাকার অবস্থা খুবই শোচনীয়। অনেক এলাকাই এখন লকডাউন আর এসব এলাকায় বসবাসকারী নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলো কোনো সাহায্য পাচ্ছে না। তাই তাদের সাহায্য পৌঁছে দিতেই কাজ করছে মিউজিশিয়ানস ফর হিউম্যানিটি।

এ দাতব্য কর্মের মূল উদ্যোক্তা এ্যাকোস্টিকার স্বত্বাধিকারী সৈকত বিশ্বাস টুটুল। ২৫শে মার্চ তাঁর দেয়া এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে সাড়া দিয়ে এক হয় সংগীত শিল্পী ও সংগীত অনুরাগীরা। এ ব্যাপারে টুটুল বলেন, “প্রথমে আমরা চার বন্ধু মিলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার সময় এ উদ্যোগের কথা ভাবি। পরে আগ্রহী সকলের সাথে আলোচনা করা হয়। প্রথমবার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শেষ হওয়ার পরেও অনেক ফোন কল ও ম্যাসেজ আসে আমাদের কাছে। একটা দীর্ঘ লিস্ট রয়ে গেছে যারা অনেক কষ্টে আছে আর রমজান মাস, এটাও এক্টা বড় ফ্যাক্ট। রমজানে যেন অন্তত কিছু মানুষ হলেও ক্ষুধায় কষ্টে না পায় তাই দ্বিতীয়বার এ উদ্যোগ নেয়া। এই জরুরী অবস্থার মাঝে, যতদিন আমাদের কাছে একজনের জন্যও ফান্ড থাকবে আমরা এটা অব্যাহত রাখব।” স্টেপ এ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার নামের এ উদ্যোগে সার্বিক সহযোগীতা করছেন কাজী বাসেদ, শিমুল, মাসুম, মানিক জসিম, আব্দুল্লাহ আল ফারাবী, আল আমিন, ইয়াসীন আব্দুল্লাহ, শায়ন রাব্বি, শুদ্ধসহ আরো অনেকে।

চাইলে যে কেউ সাহায্য প্রদান করে এ দাতব্য কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবে। ইতোমধ্যে নাম না প্রকাশের শর্তে দেশের অনেক নামকরা ও জনপ্রিয় শিল্পী অর্থ সাহায্য প্রদান করে এ দাতব্য কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা — বিকাশ (সব পার্সোনাল): 01797557902 (টুটুল), 01515605389 (ফারাবি), 01796256254 (আল আমিন); রকেট (পার্সোনাল): 017399607687; নগদ (পার্সোনাল) 01797557902। পাঠানো যাবে পেপাল এ, PayPal: [email protected]।
এছাড়া অসহায় পরিবারের ঠিকানা দিয়েও এ উদ্যোগে পাশে থাকা যাবে।
বি.দ্র: সাহায্য পাঠানোর সময় অবশ্যই রেফারেন্সে নিজের নাম লিখতে অনুরোধ করেছেন আয়োজকরা যাতে ইভেন্ট পেইজে আপনার নাম ঘোষণা করে অন্যদের উৎসাহিত করার যায়। যদি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোন, তাহলেও আপনার টাকার পরিমাণ ইভেন্টে প্রকাশ করা হবে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য।
সাহায্য প্রদান ও উদ্যোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
মিউজিশিয়ানস ফর হিউম্যানিটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন