১৯৮২ সালে ফ্রান্সে মেইক মিউজিক স্লোগানকে উপজীব্য করে শুরু হওয়া উৎসব ‘ফেৎ দো লা মিউজিক’-এর জনপ্রিয়তাই সময় পেরিয়ে পৃথিবীকে উপহার দিয়েছে বিশ্ব সংগীত দিবস। ফ্রান্সের তৎকালীন সংস্কৃতি মন্ত্রী জ্যাক ল্যাঙের অনুরোধে নাচ ও গানের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মউরিশ ফ্লউরেট। মিউজিশিয়ানদের সৃজনশীলভাবে প্রকাশের সুযোগ দেয়ার লক্ষ্যেই এই উৎসবের আয়োজন করেন তাঁরা।
ফ্রান্সের সাংস্কৃতিক অভ্যাসের ওপর ১৯৮২ সালে করা একটি গবেষণায় দেখা যায় পাঁচ মিলিয়ন মানুষের প্রতি দুইজনের মধ্যে একজন তরুণ কোন না কোন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে থাকেন। বিষয়টিকে আরো উৎসাহ দেয়া এবং সকলকে একত্র করার জন্যে একটি পরিকল্পনা করেন তাঁরা। আর এরই ধারাবাহিকতায় উত্তর গোলার্ধের সবচেয়ে বড় ছুটির দিনটিকে বেঁছে নিয়ে উৎসবের ঘোষণা দেন। প্রকাশ্য স্থানে জনসমাগম ও টিকেট ছাড়া কনসার্টের আয়োজন ছিল এই উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক। ফ্রান্স থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজনে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৮৫ সালে ইউরোপে এবং পরবর্তী সময়ে ১২০টি দেশের প্রায় ৭০০ শহরে করা এ আয়োজন জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে যায় এবং বিশ্বব্যাপী দিনটিকে আন্তর্জাতিক সংগীত দিবসের স্বীকৃতি এনে দেয়।
তবে ভিন্ন মতবাদ অনুসারে, ১৯৪৯ সালে ইউনেস্কো থেকে স্থাপিত আন্তর্জাতিক সংগীত পরিষদের পক্ষ থেকে ১৯৭৫ সালে লর্ড ইয়েহুদী মেনুহীনের উদ্যোগে পহেলা অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক সংগীত দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ফ্রান্সের উদ্যোগে আয়োজিত সংগীত উৎসবের বিপুল জনপ্রিয়তা ২১ জুনকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক সংগীত দিবসের গ্রহণযোগ্যতা এনে দেয়।
বৈশ্বিক পরিসরে সংগীতের বৈচিত্র্যকে স্বীকৃতি দেয়া ও তা গ্রহণ করার মাধ্যমে একটি সুন্দর পৃথিবী তৈরীর লক্ষ্য নিয়ে চত্বর, স্টেডিয়াম, স্টেশন, হল আর পার্কের মতো উন্মুক্ত স্থানে বিনামূল্যে সংগীত উপভোগের এ আয়োজনে আনন্দ ছড়িয়ে দেয়াটাই আন্তর্জাতিক সংগীত দিবসের মূখ্য উদ্দেশ্য।