বুকে পাথর নিয়ে ভাইকিংস ছেড়ে যাওয়ার কঠিন সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন ব্যান্ডটির ভোকালিস্ট ও প্রতিষ্ঠাতা তন্ময় তানসেন। ব্যান্ডের অন্য সদস্যরা প্রথমে এ সিদ্ধান্ত মানতে না চাইলেও কঠিন কাজটি করেছেন তিনি নিজেই।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে ব্যান্ডের সদস্যদের তন্ময় তাঁর সিদ্ধান্তের কথা বলেন। গত রাতে একাত্তর টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সকলের উদ্দেশ্য তিনি তাঁর এ সিদ্ধান্ত জানান। এ বিষয়ে মিউসোফিয়াকে তিনি বলেন, “ব্যান্ড ছেড়ে যাওয়াটা ছিল সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত। এটা আর কেউ নিতে পারতো না। তাই আমাকেই সিদ্ধান্তটি নিতে হলো। ভাইকিংস আমার সন্তানের মতো। কষ্টে মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে মরে গেলাম!”
কঠোর পরিশ্রম করে লক্ষ্যে পৌঁছানো একজন মানুষ তন্ময়। তাঁর মতে ভাইকিংসের লড়াই শেষ হয়নি। পথ এখনো অনেকটাই বাকি। লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রয়োজন আরো পরিশ্রম ও সংগ্রামের। কিন্তু তাঁর এ ভাবনার সাথে একমত নন ব্যান্ডের বাকি সদস্যরা। পরিবর্তনে বিশ্বাসী তন্ময়কে তাই নিতে হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
ব্যান্ডটির অফিসিয়াল ফেসবুক থেকে ব্যান্ডের সাথে তন্ময়ের সম্পর্ক ছিন্ন করার কারণ হিসেবে তাঁর সলো ক্যারিয়ার গড়ে তোলার বিষয়টি উল্লেখ করা হলেও মিউসোফিয়াকে তিনি স্পষ্ট জানান যে সোলো ক্যারিয়ারের কথা কখনোই ভাবেননি তিনি। কেননা সোলো প্রজেক্ট কখনও ভালো লাগেনি তাঁর। মঞ্চে ফিরলে ব্যান্ডের সাথেই ফিরবেন তিনি। তবে এ মুহূর্তে নতুন ব্যান্ড গঠনের কোন পরিকল্পনা করেননি। এ বিষয়ে ব্যান্ড ভাইকিংস সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
তন্ময়ের এ সিদ্ধান্তে মনে আঘাত পেয়েছেন তাঁর অসংখ্য ভক্ত-শ্রোতা। তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন “আমার প্রতিটি মুহূর্ত অসম্ভব কষ্ট লাগছে। কিন্তু এটা এক সময় কমে যাবে। আপনারা আবার যখন আমাকে মঞ্চে দেখবেন সব কষ্ট চলে যাবে।”
১৯৯৭ সালে তন্ময়ের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে ভাইকিংস। ১৯৯৯ সালে দেশের প্রথম ব্যান্ড হান্ট প্রতিযোগিতা বেনসন অ্যান্ড হেজেস স্টার সার্চ এ বিজয়ী হয় ব্যান্ডটি। সেই সময়ে বিপুল জনপ্রিয় এ ব্যান্ডটির কিবোর্ডিস্ট বাবুর অনুপস্থিতিতে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর প্রায় দশ বছর ভাইকিংস আড়ালে থাকলেও নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালনার মধ্য দিয়ে সরব ছিলেন তন্ময়। ২০১৫ সালে তাঁর পরিচালিত ‘রান আউট’সিনেমার মধ্য দিয়ে ১১ বছর পর আবারও গানে ফিরে ভাইকিংস। ব্যান্ডটির এ যাত্রায় দীর্ঘ ২৩ বছর সাথে ছিলেন তন্ময়।
সংযোজন: এ ঘোষণার প্রায় ১৮ ঘন্টা পর মধ্যরাতে বান্ডের আরেকটি ঘোষণায় জানানো হয় যে, সব সমস্যার সমাধান করা হয়েছে এবং তন্ময়ই বান্ডের ভোকালিস্ট হিসেবে থাকছেন। তাদের এ সিদ্ধান্তে আনতে ভূমিকা রেখেছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশ্রাফুল হক সিয়াম। ঘোষণায় তাকে অভিভাবক উল্লেখ করে ধন্যবাদ জানায় ভাইকিংস।